২০১ টি পৌরসভায় জিতবে আওয়ামী লীগ, দাবি নেতাদের

দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে ২০১টিরও বেশি মেয়র পদে জয় পাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ-এমনটাই আশা করছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁরা বলছেন, নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করতে শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগ পৌরসভায় দলীয় বিদ্রোহীদের নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। কিছু পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও তা নির্বাচনের ফল নির্ধারণে তেমন প্রভাব ফেলবে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাতটি প্রচার টিম দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচার শেষ করার পর গতকাল নির্বাচনের প্রস্তুতি ও ফল নিয়ে জানতে চাইলে কালের কণ্ঠকে নেতারা এমন মূল্যায়ন জানান। পৌরসভা নির্বাচনে দলের পক্ষে প্রচারণা চালাতে ২০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাতটি টিম গঠন করা হয়। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য নন এমন নেতাদের নিয়ে টিমগুলো গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সাত সাংগঠনিক সম্পাদকসহ আরো কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা টিমগুলোর কাজ তদারক করেন। টিমের সদস্যরা গত আট দিনে বিভিন্ন পৌরসভায় দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালান। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করেন তাঁরা। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘প্রচারণায় গিয়ে আমরা নৌকার পক্ষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত জোয়ার দেখেছি। দলের নির্বাচনী জরিপ অনুযায়ী আমরা ২০১টি পৌরসভায় জয়লাভ করব বলে আশা করছি।’ ঢাকা বিভাগের পৌরসভাগুলোতে বিদ্রোহী প্রার্থী অনেক কমে গেছে জানিয়ে আহমদ হোসেন বলেন, ‘কিছু পৌরসভায় আমাদের দলের একাধিক প্রার্থী নিয়ে সমস্যা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগ পৌরসভায়ই এ সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। টাঙ্গাইলের সখীপুর, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, শরীয়তপুর সদরসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এখনো কয়েকটি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও তাঁরা ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে পারবেন না।’ বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আমাদের দলের তৃণমূল থেকে জরিপে দেখা গেছে, ২০১টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। তবে নির্বাচনের একেবারে কাছাকাছি এসে তৃণমূল থেকে যে খবর আমরা পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে আমরা ২০১টিরও বেশি পৌরসভায় জয়লাভ করব।’ বরিশাল বিভাগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ভালো ফল আনবেন প্রত্যাশা করে নাছিম বলেন, ‘অন্য যেকোনো বিভাগের চেয়ে বরিশাল বিভাগে আমাদের প্রার্থীরা বেশি জয়লাভ করবে। এ অঞ্চলের মানুষ বরাবরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিজেদের সমর্থন দেখিয়েছে; এবারও ব্যতিক্রম হবে না।’ আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির একাধিক নেতার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য আমাদের জয়ের পথ সুগম করছে। আগে তারা স্বাধীনতার পক্ষে একধরনের মুখোশ পরে থাকত। এখন তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। ফলে নতুন প্রজন্ম, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষরা বিএনপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আশা করি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা দুই শর বেশি পৌরসভায় জয়লাভ করবেন।’ রাজশাহী বিভাগের বেশির ভাগ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে সমস্যা কেটে গেছে জানিয়ে স্বপন বলেন, ‘গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নাটোরের লালপুরে আমাদের কিছু সমস্যা থাকলেও তা সমাধান হয়ে গেছে। আজই (সোমবার) জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন।’ চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগে এখন আর বিদ্রোহী প্রার্থী নেই বললেই চলে। রাউজান, রাঙামাটিসহ আরো কয়েকটি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা সরে দাঁড়িয়েছেন। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। আশা করছি আমাদের প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন।’ সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচারণা টিমের সদস্য অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ পৌরসভায়ই আমাদের প্রার্থীরা জয়লাভ করার মতো অবস্থানে রয়েছেন। এ বিভাগে যে কটি পৌরসভায় দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ছিল তা বেশির ভাগই সমাধান হয়ে গেছে। যেটুকু সমস্যা আছে তাতে আমাদের প্রার্থীদের জয়লাভে সমস্যা হবে না।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর